DJ Billal photo

DJ Billal photo
DJ Billal photo

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৪

বিদ‘আত ও তার পরিণতি মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব। welcome to dj billal mobile 01836946377


বিদ‘আত ও তার পরিণতি

মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম

লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।

(২য় কিস্তি)

ইবাদত সংক্রান্ত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি welcome to dj billal mobile 01836946377

(ক) অহি-র বিধানের অনুসরণই আল্লাহর নৈকট্য হাছিলের একমাত্র মাধ্যম : মানব জাতি বিভিন্নভাবে আল্লাহর নৈকট্য হাছিলের চেষ্টায় ব্যস্ত। কেউ মূর্তি পূজার মাধ্যমে, কেউ কবর পূজার মাধ্যমে, কেউ পীর পূজার মাধ্যমে, আবার কেউবা ভাল কাজের দোহাই দিয়ে বিদ‘আতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাছিলে সচেষ্ট। অথচ আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে তাঁর নাযিলকৃত বিধানের যথাযথ অনুসরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষ প্রত্যেকটি ইবাদত কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে সম্পাদন করবে। আর এর মাধ্যমেই কেবল তাঁর নৈকট্য হাছিল করা সম্ভব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ اتَّقِ اللهَ وَلَا تُطِعِ الْكَافِرِيْنَ وَالْمُنَافِقِيْنَ إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيْمًا حَكِيْمًا- وَاتَّبِعْ مَا يُوْحَى إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ إِنَّ اللهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرًا-

‘হে নবী! আল্লাহ্কে ভয় কর এবং কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না। নিশ্চয়ই আল্ল­াহ সম্যক জ্ঞানী, মহা প্রজ্ঞাময়। আর তোমার রবের কাছ থেকে তোমার প্রতি যা অহী করা হয়, তুমি তার অনুসরণ কর। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত’ (আহযাব ৩৩/১-২)। তিনি অন্যত্র বলেন,اتَّبِعْ مَا أُوْحِيَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِيْنَ ‘তুমি তার অনুসরণ কর, যা তোমার প্রতি অহী করা হয়েছে তোমার রবের পক্ষ থেকে। তিনি ব্যতীত কোন সত্য ইলাহ নেই। আর মুশরিকদের থেকে বিমুখ থাক’ (আন‘আম ৬/১০৬)। তিনি অন্যত্র বলেন,ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَى شَرِيْعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلاَ تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِيْنَ لاَ يَعْلَمُوْنَ ‘অতঃপর আমি তোমাকে দ্বীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর না’ (জাছিয়া ৪৫/১৮)। welcome to dj billal mobile 01836946377

অতএব একমাত্র অহি-র বিধানের অনুসরণ করতে হবে। অহি-র বিধান বহির্ভূত আমল করলে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হ’তে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْماً فَاتَّبِعُوْهُ وَلاَ تَتَّبِعُوْا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِهِ

‘এটাই আমার সরল-সঠিক পথ। সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ করবে এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করবে না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ হ’তে বিচ্ছিন্ন করে দিবে’ (আন‘আম ৬/১৫৩)।

(খ) কুরআনের অনুসরণ যেমন অপরিহার্য হাদীছের অনুসরণ তেমনি অপরিহার্য : কুরআন ও ছহীহ হাদীছ উভয়টিই আল্লাহর অহী যা একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। অনুসরণের ক্ষেত্রে কোনটিকে বাদ দেওয়া বা হালকা মনে করার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় হ’ল, মুসলমান নামধারী একদল লোক বলে থাকে যে, হাদীছের অনুসরণের কোন প্রয়োজন নেই, শুধু কুরআনের অনুসরণই যথেষ্ট। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজেই এরূপ ভ্রান্ত আক্বীদার মানুষের আগমনের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। তিনি বলেন,لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى أَرِيْكَتِهِ يَأْتِيْهِ الأَمْرُ مِنْ أَمْرِى مِمَّا أَمَرْتُ بِهِ أَوْ نَهَيْتُ عَنْهُ فَيَقُوْلُ لاَ أَدْرِىْ مَا وَجَدْنَا فِيْ كِتَابِ اللهِ اتَّبَعْنَاهُ ‘আমি যেন তোমাদের কাউকে এরূপ না দেখি যে, সে তার গদীতে ঠেস দিয়ে বসে থাকবে, আর তার কাছে আমার কোন আদেশ বা নিষেধ পৌঁছলে সে বলবে যে, আমি এসব কিছু জানি না। যা আল্লাহর কিতাবে পাব, আমরা তারই অনুসরণ করব’।[1] welcome to dj billal mobile 01836946377

উল্লিখিত হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মুসলমানদের মধ্যকার একদল লোক হাদীছকে অগ্রাহ্য করবে এবং নিজেদেরকে শুধু কুরআনের অনুসারী বলে দাবী করবে। এর অন্তর্নিহিত কারণও উক্ত হাদীছে ইঙ্গিতে বলে দেওয়া হয়েছে যে, ঐসব লোকেরা হবে বিলাসী ও দুনিয়াদার। এরা হাদীছে বর্ণিত ইসলামের বিস্তারিত আদেশ ও নিষেধের পাবন্দী হ’তে নিজেদেরকে মুক্ত করে নিজ নিজ স্বেচ্ছাচারিতা বহাল রাখার জন্য কুরআনের অনুসারী হওয়ার দাবী করবে। অথচ হাদীছের অনুসরণ করা অপরিহার্য। কেননা-

(১) ‘হাদীছ’ সরাসরি আল্লাহর ‘অহী’ : কুরআন ‘অহীয়ে মাত্লু’ যা তেলাওয়াত করা হয়। কিন্তু হাদীছ ‘অহীয়ে গায়ের মাত্লু’ যা তেলাওয়াত করা হয় না। যেমন- আল্লাহ বলেন, وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى، إِنْ هُوَ إِلاَّ وَحْيٌ يُوْحَى ‘রাসূল তাঁর ইচ্ছামত কিছু বলেন না। কেবলমাত্র অতটুকু বলেন, যতটুকু তাঁর নিকটে ‘অহী’ করা হয়’ (নাজম ৫৩/৩-৪)।

তিনি অন্যত্র বলেন,وَأَنْزَلَ اللهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ وَكَانَ فَضْلُ اللهِ عَلَيْكَ عَظِيْمًا ‘আল্লাহ তোমার উপরে নাযিল করেছেন কিতাব ও হিকমত (সুন্নাহ) এবং তোমাকে শিখিয়েছেন, যা তুমি জানতে না। আপনার উপরে আল্লাহর অনুগ্রহ অপরিসীম’ (নিসা ৪/১১৩)।  রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

أَلاَ إِنِّيْ أُوْتِيْتُ الْقُرْآنَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ، أَلاَ يُوْشِكُ رَجُلٌ شَبْعَانُ عَلَى أَرِيْكَتِهِ يَقُوْلُ عَلَيْكُمْ بِهَذَا الْقُرْآنِ فَمَا وَجَدْتُمْ فِيْهِ مِنْ حَلاَلٍ فَأَحِلُّوْهُ وَمَا وَجَدْتُمْ فِيْهِ مِنْ حَرَامٍ فَحَرِّمُوْهُ وَإِنَّ مَا حَرَّمَ رَسُوْلُ اللهِ كَمَا حَرَّمَ اللهُ...-

‘জেনে রাখো! আমি কুরআন প্রাপ্ত হয়েছি ও তার ন্যায় আরেকটি বস্ত্ত। সাবধান! এমন একটি সময় আসছে যখন বিলাসী মানুষ তার গদিতে বসে বলবে, তোমাদের জন্য এ কুরআনই যথেষ্ট। সেখানে যা হালাল পাবে, তাকেই হালাল জানবে এবং সেখানে যা হারাম পাবে, তাকেই হারাম জানবে। অথচ আল্লাহর রাসূল যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ কর্তৃক হারাম করার অনুরূপ’।[2] welcome to dj billal mobile 01836946377

অত্র হাদীছে বর্ণিত কুরআন হ’ল প্রকাশ্য অহি এবং তার ন্যায় আরেকটি বস্ত্ত হ’ল হাদীছ, যা অপ্রকাশ্য অহি।[3] এছাড়াও জিব্রীল (আঃ) সরাসরি নেমে এসে মানুষের বেশে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের মজলিসে বসে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম, ঈমান, ইহসান প্রভৃতি বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন।[4]

(২) হাদীছের বিরোধিতা করা কুফরী : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,قُلْ أَطِيْعُوْا اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِيْنَ ‘তুমি বলে দাও যে, তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রাসূলের। যদি তারা এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহ’লে (তারা জেনে রাখুক যে), আল্লাহ কখনোই কাফেরদের ভালবাসেন না’ (আলে ইমরান ৩/৩২)।

(৩) হাদীছের অনুসরণ অর্থ আল্লাহর অনুসরণ : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,مَن يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا ‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহর আনুগত্য করল, আর যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নিল, আমরা তাদের উপরে তোমাকে পাহারাদার হিসাবে প্রেরণ করিনি’ (নিসা ৪/৮০)।

(৪) হাদীছের অনুসরণ ব্যতীত কেউ মুমিন হ’তে পারে না : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُوْنَ حَتَّى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُوْا فِيْ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا ‘তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা কখনোই মুমিন হ’তে পারবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের বিবাদীয় বিষয়সমূহে তোমাকেই একমাত্র সমাধানকারী হিসাবে গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমার দেওয়া ফায়ছালা সম্পর্কে তারা তাদের মনে কোনরূপ দ্বিধা-সংকোচ পোষণ না করবে এবং অবনতচিত্তে তা গ্রহণ না করবে’ (নিসা ৪/৬৫)। welcome to dj billal mobile 01836946377

(৫) হাদীছের বিরোধিতা করার কোন এখতিয়ার মুমিনের নেই : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلاَ مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً مُبِيْنًا ‘কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর পক্ষে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেওয়া ফায়ছালার ব্যাপারে (ভিন্নমত পোষণের) কোনরূপ এখতিয়ার নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করল, সে স্পষ্ট ভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত হ’ল’ (আহযাব ৩৩/৩৬)।

(৬) হাদীছের বিরোধিতায় জাহান্নাম অবধারিত : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِيْنَ فِيْهَا أَبَدًا ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করল, তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত হ’ল। সেখানে সে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে’ (জিন্ন ৭২/২৩)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,كُلُّ أُمَّتِيْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ  إِلاَّ مَنْ أَبَى قِيْلَ وَمَنْ أَبَى؟ قَالَ مَنْ أَطَاعَنِيْ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ أَبَى ‘আমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে যাবে। কেবল তারা ব্যতীত, যারা অসম্মত হবে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, অসম্মত কারা? তিনি বললেন, যারা আমার আনুগত্য করল, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং যারা আমার অবাধ্যতা করবে, তারাই হ’ল অসম্মত’।[5]

(৭) হাদীছের বিরোধিতা করলে দুনিয়া ও আখেরাতে ফিৎনায় পড়া অবশ্যম্ভাবী : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَلْيَحْذَرِ الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيْبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيْبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ ‘যারা রাসূলের আদেশ-নিষেধের বিরোধিতা করে, তারা যেন এ বিষয়ে ভয় করে যে, তাদেরকে (দুনিয়াবী জীবনে) গ্রেফতার করবে নানাবিধ ফিৎনা এবং (পরকালীন জীবনে) গ্রেফতার করবে মর্মান্তিক আযাব’ (নূর ২৪/৬৩)।

(৮) হাদীছ হ’ল কুরআনের ব্যাখ্যা স্বরূপ : welcome to dj billal mobile 01836946377 আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُوْنَ ‘আমরা আপনার নিকটে ‘যিক্র’ নাযিল করেছি, যাতে আপনি লোকদের উদ্দেশ্যে নাযিলকৃত বিষয়গুলি তাদের নিকটে ব্যাখ্যা করে দেন এবং যাতে তারা চিন্তা-গবেষণা করে’ (নাহ্ল ১৬/৪৪)।

উল্লিখিত আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আল্লাহর নাযিলকৃত কুরআনের স্পষ্ট ব্যাখ্যা করে মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আর এর মাধ্যমে মানুষের ইচ্ছামত কুরআনের ব্যাখ্যা করার অধিকার খর্ব হয়েছে। যদি কুরআনের ব্যাখ্যা হাদীছে না আসত, তাহ’লে মানুষ কুরআনের ইচ্ছামত ব্যাখ্যা করতে পারত, যেভাবে ইহুদী-নাছারা পন্ডিতেরা তাওরাত-ইঞ্জীলের ব্যাখ্যা করেছে। তারা কেবল অপব্যাখ্যাই করেনি বরং মূল তাওরাত-ইঞ্জীলের মধ্যে শব্দ ও বাক্য সংযোজন ও বিয়োজন করে উক্ত এলাহী গ্রন্থদ্বয়কে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছে। ফলে ইহুদী-নাছারাগণ মূল তাওরাত-ইঞ্জীল থেকে বঞ্চিত হয়ে তাদের ধর্মযাজকদের তাক্বলীদ করছে। ইসলামকেও যাতে অনুরূপ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যায়, সেজন্য আলেম নামধারী স্বার্থদুষ্ট কিছু দুনিয়াদার লোক হাদীছকে তাদের স্বেচ্ছাচারিতার পথে প্রধান অন্তরায় বিবেচনা করে হাদীছের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই এ ষড়যন্ত্র চলে আসছে, যা আজও অব্যাহত আছে। আল্লাহ ইসলামকে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষা করুন। আমীন!

সম্মানিত মুসলিম ভাই! হাদীছ যে কুরআনের ব্যাখ্যা স্বরূপ; এর কতিপয় উদাহরণ নিম্নে পেশ করা হ’ল যা বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করবে ইনশাআল্লাহ। welcome to dj billal mobile 01836946377

(১) আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ‘আর তোমরা ছালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকূ কর’ (বাক্বারাহ ২/৪৩)।

অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ছালাত ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। কিন্তু ছালাত আদায়ের পদ্ধতি কি হবে? কোন ওয়াক্তের ছালাত কত রাক‘আত আদায় করতে হবে? কোথায় হাত রেখে রুকূ করতে হবে? অনুরূপভাবে যাকাত ফরয হওয়ার জন্য নিছাব কতটুকু এবং কি পরিমাণ যাকাত, কখন দিতে হবে? এর কিছুই কুরআনে বর্ণিত হয়নি। এগুলো জানতে হ’লে হাদীছের দিকে ফিরে যেতে হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাত আদায়ের সঠিক পদ্ধতি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। যেমন- হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, একসময় নবী (ছাঃ) মসজিদে তাশরীফ আনলেন, তখন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে ছালাত আদায় করল। অতঃপর সে নবী করীম (ছাঃ)-কে সালাম দিল। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, তুমি ফিরে গিয়ে ছালাত আদায় কর, কেননা তুমি ছালাত আদায় করনি। লোকটি পুনরায় ছালাত আদায় করে এসে নবী করীম (ছাঃ)-কে সালাম দিল। তিনি বললেন, তুমি ফিরে গিয়ে ছালাত আদায় কর, কেননা তুমি ছালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হ’ল। অতঃপর লোকটি বলল, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। আমি এর চেয়ে সুন্দর ছালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বললেন,

إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِيْ صَلاَتِكَ كُلِّهَا-

‘যখন তুমি ছালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন থেকে তোমার পক্ষে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়বে। অতঃপর রুকূতে যাবে এবং ধীর-স্থিরভাবে রুকূ করবে। অতঃপর রুকূ হ’তে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর ধীর-স্থিরভাবে সিজদাহ করবে। অতঃপর সিজদাহ হ’তে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদাহ করবে। অতঃপর পূর্ণ ছালাত এভাবে আদায় করবে’।[6]

কি পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্য থাকলে যাকাত ফরয হবে এবং তাকে কি পরিমাণ যাকাত আদায় করতে হবে? এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,

وَلَيْسَ عَلَيْكَ شَىْءٌ يَعْنِيْ فِيْ الذَّهَبِ حَتَّى يَكُوْنَ لَكَ عِشْرُوْنَ دِيْنَارًا فَإِذَا كَانَ لَكَ عِشْرُوْنَ دِيْنَارًا وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ فَفِيْهَا نِصْفُ دِيْنَارٍ فَمَا زَادَ فَبِحِسَابِ ذَلِكَ-

‘বিশ দীনারের কম স্বর্ণে যাকাত ফরয নয়। যদি কোন ব্যক্তির নিকট বিশ দীনার পরিমাণ স্বর্ণ এক বছর যাবৎ থাকে, তবে এর জন্য অর্ধ দীনার যাকাত দিতে হবে। এরপরে যা বৃদ্ধি পাবে তার হিসাব ঐভাবেই হবে’।[7]

রৌপ্যের নিছাব উল্লেখ করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَلاَ فِيْ أَقَلَّ مِنْ خَمْسِ أَوَاقٍ مِنَ الْوَرِقِ صَدَقَةٌ ‘পাঁচ উকিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যে যাকাত নেই’।[8] welcome to dj billal mobile 01836946377

কৃষিপণ্যের যাকাতের নিছাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لَيْسَ فِيْمَا أَقَلُّ مِنْ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ صَدَقَةٌ ‘পাঁচ ওয়াসাক্ব-এর কম উৎপন্ন ফসলের যাকাত নেই’।[9]

অতএব বুঝা গেল, হাদীছের অনুসরণ ব্যতীত সঠিক পদ্ধতিতে ছালাত ও যাকাত আদায় করা সম্ভব নয়।

(২) আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,اَلَّذِيْنَ آمَنُواْ وَلَمْ يَلْبِسُوْا إِيْمَانَهُم بِظُلْمٍ أُوْلَـئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُمْ مُّهْتَدُوْنَ ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই সৎপথপ্রাপ্ত’ (আন‘আম ৮২)।

অত্র আয়াতে বর্ণিত بِظُلْمٍ দ্বারা ছাহাবায়ে কেরাম সাধারণভাবে সকল প্রকার যুলুম বুঝেছিলেন। সেটা যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন। এজন্য এ আয়াতটির মর্ম তাদের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকলে তারা বলেছিলেন, يَا رَسُوْلَ اللهِ! أَيُّنَا لاَ يَظْلِمُ نَفْسَهُ؟  ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে তার নফসের উপর যুলুম করে না? তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছিলেন,لَيْسَ ذَلِكَ، إِنَّمَا هُوَ الشِّرْكُ، أَلَمْ تَسْمَعُوْا مَا قَالَ لُقْمَانُ لِاِبْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَبُنَيَّ لاَ تُشْرِكْ بِاللهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ ‘তোমরা যে যুলুমের কথা ভাবছ সেটা উদ্দেশ্য নয়। বরং ওটা হচ্ছে শিরক। তোমরা কি লোকমান তার সন্তানকে উপদেশ স্বরূপ যা বলেছিলেন তা শুননি যে, ‘হে বৎস! আল্লাহর সাথে শিরক কর না। নিশ্চয়ই শিরক বড় যুলুম’ (লোকমান ১৩)।[10]

হে মুসলিম ভাই! লক্ষ্য করুন, ছাহাবায়ে কেরাম পর্যন্ত উল্লিখিত আয়াতে বর্ণিত بِظُلْمٍ শব্দের অর্থ ভুল বুঝেছিলেন। যদি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে তাদের ভুল শুধরিয়ে না দিতেন এবং বুঝিয়ে না দিতেন যে, আয়াতে উল্লিখিত ظلم দ্বারা শিরক উদ্দেশ্য, তাহ’লে আমরাও তাদের ভুলের অনুসরণ করতাম। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দিকনির্দেশনামূলক হাদীছ দ্বারা আমাদেরকে এত্থেকে রক্ষা করেছেন।

৩. আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, حُرِّمَتْ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةُ وَالْدَّمُ ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু ও রক্ত’ (মায়েদা ৩)। আমরা যদি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হাদীছের অনুসরণ না করি তাহ’লে মৃত মাছ ও কলিজা আমাদের জন্য হারাম হয়ে যাবে। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এগুলোকে হালাল সাব্যস্ত করেছেন। তিনি বলেন,أُحِلَّتْ لَنَا مَيْتَتَانِ وَدَمَانِ : فَأَمَّا الْمَيْتَتَانِ فَالْجَرَادُ وَالْحُوْتُ، وَأَمَّا الدَّمَانِ فَالْكَبِدُ وَالطِّحَالُ ‘দু’প্রকারের মৃত জন্তু এবং দু’প্রকারের রক্ত আমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। মৃত জন্তু দু’টি হ’ল টিড্ডি ও মাছ। আর দু’প্রকারের রক্ত হ’ল কলিজা ও প্লীহা’।[11]

অতএব ছালাত, ছিয়াম, যাকাত, হজ্জ সহ ইবাদতের সকল বিষয়েই এরূপ অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে যার সমাধান হাদীছের অনুসরণ ব্যতীত সম্ভব নয়। welcome to dj billal mobile 01836946377

(গ) যাবতীয় ইবাদত কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে সীমাবদ্ধ : আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যেমন তাঁর ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তাঁর ইবাদতের যাবতীয় বিধি-বিধান অহী মারফত জানিয়ে দিয়েছেন, যা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ গ্রন্থ সমূহে বিদ্যমান। অতএব প্রত্যেকটি ইবাদত একমাত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কুরআন ও ছহীহ হাদীছ বহির্ভূত কোন আমল আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় নয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা আমাদের উপর ছালাত ফরয করেছেন। সাথে সাথে ছালাতের পরিমাণ, সময় ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। ছালাতের এই নির্দিষ্ট পরিমাণ, সময় ও পদ্ধতির অনুসরণ না করলে ছালাত বাতিল বলে গণ্য হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের উপর ছিয়াম ফরয করেছেন এবং তার জন্য রামাযান মাসকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। রমাযান মাসের এই ফরয ছিয়ামকে শারঈ ওযর ব্যতীত অন্য কোন মাসে আদায় করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের উপর হজ্জ ফরয করেছেন। সাথে সাথে হজ্জের সময় ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হজ্জের সময়কে উপেক্ষা করে অন্য কোন সময়ে হজ্জ সম্পাদন করলে অথবা অন্য কোন পদ্ধতিতে হজ্জ করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অনুরূপভাবে প্রত্যেকটি ইবাদত কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে আদায় করতে হবে। অন্যথা সে ইবাদত আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। বরং তা বিদ‘আতে পরিণত হবে, যার পরিণাম জাহান্নাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَمَنْ تَابَ مَعَكَ وَلاَ تَطْغَوْا إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ ‘তুমি যেভাবে আদিষ্ট হয়েছ তাতে স্থির থাক এবং তোমার সাথে যারা ঈমান এনেছে তারাও স্থির থাকুক এবং সীমালংঘন কর না। তোমরা যা কর নিশ্চয়ই তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা’ (হূদ ১১/১১২)।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ ‘যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করল যাতে আমার নির্দেশনা নেই তা প্রত্যাখ্যাত।[12] তিনি আরো বলেন, مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ ‘যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে এমন কিছু নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[13] অতএব যতটুকু ইবাদত কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত ততটুকুই আল্লাহর নিকট গ্রহণীয়। কুরআন ও ছহীহ হাদীছ বহির্ভূত আমল মানুষের নিকট যত ভাল কাজ হিসাবে বিবেচিত হোক না কেন তা অবশ্যই বর্জনীয়।

(ঘ) ইবাদতকে শরী‘আত বহির্ভূত কোন সময় ও স্থানের সাথে নির্দিষ্ট করা জায়েয নয় : ইসলামী শরী‘আত যে স্থান ও সময়কে যে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করেছে সে স্থান ও সময়কে কেবল সে ইবাদতের জন্যই খাছ করতে হবে। যেমন ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক হজ্জের যে স্থান ও সময় নির্দিষ্ট হয়েছে তা কেবল সে স্থান ও সময়েই সম্পাদন করতে হবে। শাওয়াল মাসের ৬টি ছিয়াম সে মাসেই আদায় করতে হয়। পক্ষান্তরে ইসলামী শরী‘আত যে স্থান ও সময়কে কোন ইবাদতের জন্য খাছ করেনি, সে সকল স্থান ও সময়কে কোন ইবাদতের জন্য খাছ করা যাবে না। খাছ করলে তা বিদ‘আতে পরিণত হবে। যেমন জুম‘আর দিনকে বিশেষ ফযীলতের দিন মনে করে ছিয়াম পালন করা, মধ্য শা‘বানের দিন ও রাতকে ছালাত ও ছিয়ামের জন্য খাছ করা, ২৭শে রজবকে মি‘রাজের রাত মনে করে কোন ইবাদতের জন্য খাছ করা, কারো মৃত্যুর পরে চল্লিশা, কুলখানি, চেহলাম পালন করা ইত্যাদি জায়েয নয়। কেননা ইসলামী শরী‘আত উল্লিখিত দিনগুলিকে বিশেষ কোন ইবাদতের জন্য খাছ করেনি।

(ঙ) দলীল বিহীন ইবাদত নিষিদ্ধ : কোন কাজ তখনই ইবাদত হিসাবে গণ্য হবে যখন তা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হবে। দুঃখের বিষয় হ’ল, যখনই মানুষের কোন আমল কুরআন ও ছহীহ হাদীছ বহির্ভূত বলে প্রমাণিত হয়, তখনই সে উক্ত আমলকে বলবৎ রাখার জন্য বলে উঠে, এই আমলকে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের কোথায় নিষেধ করা হয়েছে?

এই সূত্র প্রয়োগ করলে তো কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বাইরে অনেক বিধান জারী করা সম্ভব। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা আমাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয করেছেন। আমি যদি মনে করি যে, ছালাত আদায় করা তো ভাল কাজ। এখন থেকে সকাল ১০ টার দিকে আরো এক ওয়াক্ত ছালাত বৃদ্ধি করা হোক। কেননা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের কোন স্থানে বলা হয়নি যে, ৬ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করা যাবে না। অনুরূপভাবে আমাদের উপর মাগরিবের ছালাত ৩ রাক‘আত ফরয। যেহেতু ছালাত ভাল কাজ সেহেতু মাগরিবের ছালাত ৪ রাক‘আত আদায় করব। কেননা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের কোথাও বর্ণিত হয়নি যে, মাগরিবের ছালাত ৪ রাক‘আত আদায় করা যাবে না।

একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসাবে মনোনীত করে তার যাবতীয় বিধি-বিধান মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর নাযিল করেছেন এবং তাঁর জীবদ্দশাতেই তা পূর্ণতার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন,الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلاَمَ دِيْنًا ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম’ (মায়েদা ৫/৩)। অতএব দ্বীন-ইসলাম যেহেতু আল্লাহর বিধান দ্বারা পরিপূর্ণ, সেহেতু প্রত্যেকটি ইবাদত অবশ্যই তাঁর বিধান দ্বারা সাব্যস্ত। সুতরাং যে সকল কাজ কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয় তা যত ভাল কাজই মনে হোক না কেন তা কখনোই ইবাদত হিসাবে গণ্য হবে না। বরং তা অবশ্যই বর্জনীয়।

(চ) শরী‘আত সম্মত আমলই কেবল ভাল আমল হিসাবে গণ্য : আমলের ভাল-মন্দ নির্ধারিত হবে একমাত্র শরী‘আতের ভিত্তিতে। ইসলামী শরী‘আত যে আমলকে ভাল হিসাবে আখ্যায়িত করেছে, কেবলমাত্র সেটাই ভাল আমল বলে গণ্য হবে। আর ইসলামী শরী‘আত পরিপন্থী সকল আমল মন্দ আমল হিসাবে পরিগণিত হবে। যদিও মানুষের বিবেকে তা ভাল আমল হিসাবে বিবেচিত হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالاً- الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِيْ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا ‘তুমি বলে দাও, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দেব? দুনিয়ার জীবনে যাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর আমল করে যাচ্ছে’ (কাহফ ১৮/১০৩-১০৪)। welcome to dj billal mobile 01836946377

অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা একজন ভাল আমলকারীকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। কেননা তা মানুষের দৃষ্টিতে ভাল আমল হিসাবে বিবেচিত হ’লেও ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে ভাল নয়। অতএব কোন কাজ সৎকর্ম হিসাবে গণ্য হওয়ার জন্য শর্ত হ’ল তিনটি : (ক) পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী হওয়া। (খ) কুরআন ও সুন্নাহর ব্যাখ্যা রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের বুঝ অনুযায়ী হওয়া। (গ) বিদ‘আত মুক্ত হওয়া। বস্ত্তত রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে যা দ্বীন বলে গৃহীত ছিল কেবলমাত্র সেটাই দ্বীন। পরবর্তীকালে ধর্মের নামে আবিষ্কৃত কোন রীতি-নীতিকে দ্বীন বলা হবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই দ্বীন পূর্ণতা লাভ করেছে। তাতে কম-বেশী করার এখতিয়ার কারো নেই।

(ছ) ইসলামের কোন বিধান যঈফ ও জাল হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত হবে না : আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির নিকটে ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান অহী মারফত নাযিল করেছেন। অতএব একমাত্র অহি-র বিধান তথা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছই ইসলামের চূড়ান্ত বিধান। পক্ষান্তরে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ বহির্ভূত কথিত যঈফ ও জাল হাদীছ ইসলামের বিধান নয়। কেননা কথিত যঈফ ও জাল হাদীছ কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং তা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দিকে সম্পর্কিত বানোয়াট মিথ্যা বর্ণনা বৈ কিছুই নয়; যার পরিণাম জাহান্নাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,إِنَّ كَذِبًا عَلَىَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ، مَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘আমার প্রতি মিথ্যারোপ করা অন্য কারো প্রতি মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি আমার প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যারোপ করে সে যেন অবশ্যই তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেয়’।[14] welcome to dj billal mobile 01836946377

আমরা অনেকেই বলে থাকি যে, হাদীছ কখনো যঈফ ও জাল হয় না। একথা সঠিক যে, রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীছ কখনো যঈফ ও জাল হয় না। বরং যেসব কথা ও কর্ম রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত নয়; অথচ তা রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে সম্বন্ধিত করা হয় তাই মূলতঃ যঈফ ও জাল হাদীছ হিসাবে প্রমাণিত। আর এরূপ যঈফ ও জাল হাদীছ বর্ণনা করাই রাসূল (ছাঃ)-এর উপর মিথ্যারোপ করা, যার পরিণাম জাহান্নাম।

(জ) সুন্নাত পরিপন্থী আমলকে সর্বদা অস্বীকৃতি জানানো অপরিহার্য : মুমিন ব্যক্তি কেবলমাত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের যথাযথ অনুসরণ করবে এবং কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পরিপন্থী আমলকে নিঃশর্তভাবে প্রত্যাখ্যান করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذَا دُعُوْا إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ- وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَيَخْشَ اللهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُوْنَ-

‘মুমিনদের উক্তি তো এই যে, যখন তাদের মধ্যে ফায়ছালা করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তখন তারা বলে, আমরা শ্রবণ করলাম ও আনুগত্য করলাম। আর তারাই সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হ’তে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম’ (নূর ২৪/৫১-৫২)। তিনি অন্যত্র বলেন, ‘আমি তোমাকে দ্বীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর না’ (জাছিয়া ৪৫/১৮)।

ছাহাবায়ে কেরাম অহি-র বিধান মানার ব্যাপারে যেমন কঠোর ছিলেন। অহি-র বিধান বহির্ভূত আমলের বিরুদ্ধে তেমনি কঠোর ছিলেন। যেমন- মু‘আবিয়া (রাঃ) যখন হজ্জ ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মদীনায় আসলেন। তখন তাঁর সাথে কিছু গম এসেছিল। তিনি দেখলেন যে, সিরিয়া থেকে আসা অর্ধ ছা‘ গমের মূল্য মদীনার এক ছা‘ খেজুরের মূল্যের সমান হয়। এমতাবস্থায় তিনি তাঁর ইজতিহাদী রায় প্রকাশ করলেন যে, কেউ গম দ্বারা ফেৎরা আদায় করলে অর্ধ ছা‘ দিতে পারে। সাথে সাথে বিশিষ্ট ছাহাবী আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) তার তীব্র প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, فَأَمَّا أَنَا فَلاَ أَزَالُ أُخْرِجُهُ كَمَا كُنْتُ أُخْرِجُهُ أَبَدًا مَا عِشْتُ ‘আমি যতদিন দুনিয়ায় বেঁচে থাকব ততদিন তা (অর্ধ ছা‘ গমের ফিৎরা) কখনোই আদায় করব না। বরং (রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায়) আমি যা দিতাম তাই-ই দিয়ে যাব’।[15]

সুন্নাত ও বিদ‘আতকে জানা অপরিহার্য

মানুষ কিভাবে ইবাদত করবে তার বাস্তব রূপ মুহাম্মাদ (ছাঃ) দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই সঠিকভাবে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণ করা ওয়াজিব। সাথে সাথে তাঁর সুন্নাতকে ধ্বংসকারী বিদ‘আত সম্পর্কে জানাও ওয়াজিব। যেমনভাবে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার সাথে সাথে তাকে ধ্বংসকারী শিরক সম্পর্কে জানা ওয়াজিব। কেননা শিরক ও বিদ‘আত সম্পর্কে জানা না থাকলে সে কখন কিভাবে শিরক ও বিদ‘আতে লিপ্ত হয়ে আল্লাহর সরল-সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হবে তা উপলব্ধি করতে পারবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُ وَلاَ تَتَّبِعُوْا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِهِ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ ‘এটাই আমার সরল-সঠিক পথ। সুতরাং তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করবে এবং এদ্ভিন্ন অন্যান্য পথ অনুসরণ করবে না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ হ’তে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। আল্লাহ তোমাদেরকে এরূপ নির্দেশ দিলেন এজন্য যে, যাতে তোমরা সাবধান হও’ (আন‘আম ৬/১৫৩)। welcome to dj billal mobile 01836946377

অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যেমনভাবে তাঁর সরল-সঠিক পথ তথা সুন্নাতের পথের অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনিভাবে তাকে ধ্বংসকারী পথ তথা বিদ‘আতের পথ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি অন্যত্র বলেন,فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَيُؤْمِنْ بِاللهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لاَ انْفِصَامَ لَهَا وَاللهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ ‘যে ব্যক্তি ত্বাগূতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে সে এমন এক মযবূত হাতল ধরবে যা কখনো ভাঙ্গবে না। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, প্রজ্ঞাময়’ (বাক্বারাহ ২/২৫৬)।

তিনি অন্যত্র বলেন,وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَسُوْلاً أَنِ اعْبُدُوْا اللهَ وَاجْتَنِبُوْا الطَّاغُوْتَ ‘আল্লাহর ইবাদত করার ও ত্বাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি’ (নাহল ১৬/৩৬)।

তিনি অন্যত্র বলেন,وَالَّذِيْنَ اجْتَنَبُوْا الطَّاغُوْتَ أَنْ يَعْبُدُوْهَا وَأَنَابُوْا إِلَى اللهِ لَهُمُ الْبُشْرَى فَبَشِّرْ عِبَادِ ‘যারা ত্বাগূতের পূজা হ’তে দূরে থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। অতএব আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদ দাও’ (যুমার ৩৯/১৭)।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَكَفَرَ بِمَا يُعْبَدُ مِنْ دُوْنِ اللهِ حَرُمَ مَالُهُ وَدَمُهُ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ ‘যে ব্যক্তি বলল, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য ইলাহ নেই এবং আল্লাহকে ছাড়া যাদের ইবাদত করা হয় তাদেরকে অস্বীকার করল, তার রক্ত ও সম্পদ (মুসলমানদের জন্য) হারাম এবং তার প্রতিদান আল্লাহর নিকটে রয়েছে’।[16]

উল্লিখিত দলীল সমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইসলাম দু’টি মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। তা হ’ল, (ক) একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা। (খ) একমাত্র অহি-র বিধান অনুযায়ী ইবাদত করা। অতএব আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা যেমন ওয়াজিব, সাথে সাথে অহি-র বিধান বহির্ভূত ইবাদত বর্জন করা তেমনি ওয়াজিব। আর এজন্যই ছাহাবায়ে কেরাম তা থেকে বাঁচার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে কল্যাণ-অকল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন। যেমন- হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, ‘লোকেরা নবী (ছাঃ)-কে কল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করত। আর আমি তাঁকে অকল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম; এই ভয়ে যে, আমাকে যেন ঐ সকল অকল্যাণ পেয়ে না বসে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহেলিয়্যাতে অকল্যাণকর অবস্থায় জীবন যাপন করতাম। অতঃপর আল্লাহ আমাদেরকে এ কল্যাণ দান করেছেন। এ কল্যাণকর অবস্থার পরে আবার কোন অকল্যাণের আশঙ্কা আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঐ অকল্যাণের পরে কোন কল্যাণ আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তা হবে ধূমায়িত (মন্দ মেশানো)। আমি বললাম, ধূমায়িত (মন্দ মেশানো) কি? তিনি বললেন, এমন একদল লোক যারা আমার সুন্নাত ত্যাগ করে অন্য পথে পরিচালিত হবে। তাদের কাজে ভাল-মন্দ সবই থাকবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, ঐ কল্যাণের পরে কোন অকল্যাণ আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। জাহান্নামের দিকে আহবানকারীদের উদ্ভব ঘটবে। যারা তাদের ডাকে সাড়া দিবে তাকেই তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এদের পরিচয় বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, তারা আমাদেরই সম্প্রদায়ভুক্ত এবং কথা বলবে আমাদেরই ভাষায়। আমি বললাম, আমি যদি এ অবস্থায় পড়ে যাই তাহ’লে আপনি আমাকে কি করার আদেশ দেন? তিনি বললেন, মুসলিমদের দল ও তাদের ইমামকে অাঁকড়ে ধরবে। আমি বললাম, যদি মুসলিমদের এহেন দল ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেন, তখন তুমি তাদের সকল দল-উপদলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এবং মৃত্যু আসা পর্যন্ত বৃক্ষমূল দাঁতে অাঁকড়ে ধরে হ’লেও তোমার দ্বীনের উপর অটল থাকবে’।[17] welcome to dj billal mobile 01836946377

[চলবে]

১. আহমাদ, আবুদাঊদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী; সনদ ছহীহ, মিশকাত, আলবানী হা/১৬২; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৫৪ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।

[2]. আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৬৩।

[3]. ড. মুহাম্মাদ আবু শাহবাহ, দিফা‘ ‘আনিস সুন্নাহ (কায়রো : মাকতাবাতুস সুন্নাহ ১৪০৯/১৯৮৯) পৃ: ১৫।

[4]. হাদীছে জিব্রীল, মুসলিম হা/৮, মিশকাত হা/২।

[5]. বুখারী হা/৭২৮০, মিশকাত হা/১৪৩, ‘কিতাব ও সুন্নাতকে অাঁকড়ে ধারা’ অধ্যায়।

[6]. বুখারী হা/৭৯৩; মুসলিম হা/৩৯৭।

[7]. আবূদাউদ হা/১৫৭৩, ‘যাকাত’ অধ্যায়, আলবানী, সনদ ছহীহ।

[8]. বুখারী হা/১৪৮৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, মুসলিম হা/৯৭৯; মিশকাত হা/১৭৯৪।

[9]. বুখারী হা/১৪৮৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ঐ, বঙ্গানুবাদ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ২/১২০ পৃঃ; মুসলিম হা/৯৭৯; মিশকাত হা/১৭৯৪।

[10]. বুখারী হা/৪৬২৯, ৪৭৭৬, ৬৯১৮, ৬৯৩৭; মুসলিম হা/ ১২৪, ‘ঈমান’ অধ্যায়।

[11]. মিশকাত হা/৪২৩২; সিলসিলা ছহীহা হা/১১১৮।

[12]. মুসলিম হা/১৭১৮।

[13]. বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০।

[14]. বুখারী হা/১২৯১, ‘জানাযা’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ২/২৭ পৃঃ; মুসলিম হা/৪।

[15]. বুখারী হা/১৫০৮; মুসলিম হা/৯৮৫।

[16]. মুসলিম হা/২৩।

[17]. বুখারী হা/৩৬০৬, বঙ্গানুবাদ (তাওহীদ পাবলিকেশান্স) ৩/৫০৮ পৃঃ; মুসলিম হা/১৮৪৭; মিশকাত হা/৫৩৮২।

  welcome to dj billal mobile 01836946377



Comments

  by Html Comment Box
(Nov 11, 2013) Anonymous said:

    Valo dol

3
rss



[click to go top]
Home | About Us | Archive | Download | Site Map | Contact Us
facebook       
Monthly At-Tahreek, which is running from Rajshahi is an extra-ordinary Islamic Research Journal
of Bangladesh is directed to Salafi Path, based on pure Tawheed and Saheeh Sunnah.
Copyright ©2012 Monthly At Tahreek, Powered By Hadeeth Foundation Bangladesh.
Design & Developed By Abdullah Rusafy
বিদ‘



বিদ‘


বিদ‘

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন